এবার সারণিটি পূরণ করোঃ
১– ১০ পর্যন্ত সংখ্যার যোগফল | ১+ ২ + ৩ + ... ... ... + ১০ | ৫৫ |
১ – ১০০ পর্যন্ত সংখ্যার যোগফল | ১+ ২ + ৩ + ... ... ... + ১০০ | ৫০৫০ |
১ – ১০০০ পর্যন্ত সংখ্যার যোগফল | ১+ ২ + ৩ + ... ... ... + ১০০০ | ৫০৫০০ |
১ – ১০০০০ পর্যন্ত সংখ্যার যোগফল | ১+ ২ + ৩ + ... ... ... + ১০০০০ | ? |
১ - ১০০০০০ পর্যন্ত সংখ্যার যোগফল | ১+ ২ + ৩ + ... ... ... + ১০০০০০ | ? |
১ – ১০০০০০০ পর্যন্ত সংখ্যার যোগফল | ১+ ২ + ৩ + ... ... ... + ১০০০০০০ | ? |
আচ্ছা, উপরের ছকটিতে কোনো গাণিতিক সূত্র বা নীতি খজেুঁ পাচ্ছ কি? দেখো তো ১ থেকে ৫০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলোর যোগফল কি একই নিয়মে নির্ণয় করা কিনা? ১ থেকে ৫০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলো ক্রমানুসারে যোগ করে উপরের ছকের নিয়মে প্রাপ্ত যোগফল সঠিকতা যাচাই করো।
বুঝতেই পারছো, ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলোর যোগফলের সূত্র বা নীতি এবং ১ থেকে ৫০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলো যোগফলের সূত্র বা নীতি কিছুটা আলাদা।
তাহলে, এমন কোনো নিয়ম বা নীতি থাকলে খুবই ভালো হতো যেটা দিয়ে ১ থেকে যেকোনো স্বাভাবিক সংখ্যা পর্যন্ত যোগফল নির্ণয় করা যেত।
ঠিক আছে, চলো নিচের ছবিগুলো থেকে কোনো বুদ্ধি বা কোনো নীতি খজেুঁ পাওয়া যায় কিনা দেখি।
শেষের ছবিটায় মোট কতটি ব্লক আছে সেটা কিন্তু একটা একটা করে না গুণেও বলা যায়। কীভাবে বলা যায় তোমরা ভেবে
দেখো তো? একটা ব্যাপার খেয়াল করো, ছবিতে কমলা ও সবুজ রংয়ের ব্লকের সংখ্যা সমান। তাহলে, শেষের ছবির মোট ব্লক সংখ্যাকে অর্ধেক করলে বা দুইভাগ করলেই কমলা রংয়ের ব্লক কতগুলো আছে তা জানতে পারবে। এবার, তোমাকে ভাবতে হবে ছবিগুলোর মাধ্যমে ক্রমানুসারে যোগ না করে অন্য কোনো সহজ উপায়ে ১ থেকে ৫ পর্যন্ত সংখ্যাগুলোর যোগফল নির্ণয় করা যায় কিনা? একইভাবে তুমি কি ১ থেকে ৮০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলোর যোগফল নির্ণয় করতে পারবে? তুমি চাইলে একইভাবে খুব সহজেই ১ থেকে ৯০০০ পর্যন্ত যোগফল নির্ণয় করতে পারবে।
তোমরা কি জানো এই সহজ পদ্ধতিটা কোন মহান গণিতবিদ আবিষ্কার করেছিলেন?
তিনি হলেন কার্ল ফ্রিডরিখ গাউস। মজার ব্যাপার হলো তোমাদের মতো স্কুলে পড়ার সময়েই তিনি এই পদ্ধতিটা আবিষ্কার করেন।
সেই গল্পটা বলি এবার।
অনেক কাল আগের কথা, কার্ল ফ্রিডরিখ গাউস তখন খুব ছোট ছিলেন। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধি ও বুদ্ধি প্রয়োগের কৌশল যাচাইয়ের জন্য নানান ধরনের গাণিতিক সমস্যা, পাজল সমাধান করতে দিতেন। এমনই একদিন গাউসের শিক্ষক ক্লাসে ১ – ১০০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলোর যোগফল নির্ণয় করতে বললেন। তিনি ভাবলেন এই সমস্যাটি সমাধান করতে নিশ্চয়ই অনেক সময় লাগবে। গাউস লক্ষ্য করলেন সমস্যাটি সমাধান করতে গিয়ে ক্লাসের সবার তো খাতা-কলম ছিঁড়ে ফেলার মতো অবস্থা। ছোট্ট গাউস একটি ফন্দি আঁটলেন। তিনি একটি বিশেষ নিয়মে ১– ১০০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলোর যোগফল বের করে ফেললেন এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শিক্ষকের কাছে খাতা জমা দিলেন। শিক্ষক যতক্ষণে এটি করতে দিয়ে তার চেয়ারে হেলান দিয়ে একটু আরাম করে বসবেন সেই সময়েই গাউসের সমাধান করা শেষ দেখে অবাক হয়ে গেলেন। ক্লাসের সহপাঠীরা গাউসের দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলো।
এখন তো নিশ্চয়ই সবার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে তিনি কীভাবে এটি এত সহজে সমাধান করেছিলেন! কী ছিল তার সমাধান কৌশল, ছবিতেই দেখে নাও।
এখানে প্রথম সংখ্যা ১ ও শেষ সংখ্যা ১০০। এ দুটোর যোগফল হয় ১০১। আবার একই ভাবে ২ ও ৯৯ সংখ্যা
দুটির যোগফল ১০১ । একই নিয়মে ৩ ও ৯৮ এর যোগফল ১০১। এভাবে যোগ করে মোট ৫০টি ১০১ পাওয়া
যাবে। তাই সহজেই তোমরা বুঝতে পারছ ১ – ১০০ এর যোগফল হবে ৫০ × ১০১ = ৫০৫০। আর এভাবেই
ছোট্ট গাউস খুব অল্প সময়েই ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলোর যোগফল বের করেছিলেন।
মজার বিষয় হলো – গাউসের এই পদ্ধতি থেকেই ১ থেকে যেকোনো স্বাভাবিক সংখ্যা পর্যন্ত যোগফল নির্ণয়ের
সহজ একটি গাণিতিক সূত্র বা নীতি পাওয়া যায়। তোমরাও খুঁজে দেখো তো গাণিতিক সূত্র বা নীতিটি বের
করতে পারো কিনা?
একক কাজ: কর্মপত্র দিয়াশলাইয়ের কাঠি দিয়ে নকশা তৈরি করি |
---|
ক) দিয়াশলাইয়ের কাঠি দ্বারা উপরের চিত্রের মতো করে নকশা তৈরি করো।
খ) একইভাবে একই দৈর্ঘ্যের দিয়াশলাইয়ের কাঠি দ্বারা ৪র্থ ও ৫ম চিত্র বানাও।
চিত্র নম্বর | চিত্র | দিয়াশলাইয়ের কাঠির সংখ্যা | গাণিতিক নীতি |
---|---|---|---|
১ম | |||
২য় | |||
৩য় | |||
৪র্থ | |||
৫ম | |||
. | |||
. | |||
. | |||
১০ম |
গ) চিত্রগুলো তৈরি করতে দিয়াশলাইয়ের কাঠির সংখ্যাকে বীজগাণিতিক নীতির মাধ্যমে প্রকাশ করো।
ঘ) বীজগাণিতিক নীতিটি ব্যবহার করে ৫০তম চিত্রের দিয়াশলাইয়ের কাঠির সংখ্যা নির্ণয় করো।
ঙ) ১ম ৫০টি চিত্র তৈরি করতে দিয়াশলাইয়ের মোট কতটি কাঠি লাগবে?
আরও দেখুন...